অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক

Invalid Click
অনেক আগে থেকেই অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক যাচাই বাছাই করা হলেও তা সম্পর্কে কোন রিপোর্ট দেয়া হতো না কিন্তু বর্তমানে তা রিপোর্টে দেখানো হয়। আর এরপর থেকেই অনেকেই এ বিষয়ে ভয় পাচ্ছেন এবং সঠিক নিয়ম কানুন অনুসরণ না করার কারণে আয়কৃত অর্থ হারাচ্ছেন। তাই আসুন জেনে নেই অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক আসলে কি এবং কিভাবে তা কমানো যায়।
অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক কি?
যদি কোনভাবে কোন মিথ্যে ক্লিক বা ইমপ্রেশন এর জন্য বিজ্ঞাপনদাতাদের থেকে অর্থ নেয়া হয় যা অবৈধ অর্থাৎ ক্লিকটি ইচ্ছেকৃত ভাবে শুধু আয় বাড়াতে করা তখন তা অবৈধ ক্লিক হিসেবে গ্রহণ করা হবে। একই সাথে যদি কোন সফটওয়্যার ওয়েবসাইট ভিজিট করে তবে সে সময়ে ঘটে যাওয়া ইমপ্রেশনকেও অবৈধ হিসেবে ধরা হবে।  সোজা কথায় আয় বাড়াতে বিজ্ঞাপনে ক্লিক ঘটানো হতে পারে অবৈধ ক্লিক। আবার ভুল বশত ঘটে যাওয়া ক্লিকও অবৈধ ক্লিক।
যেসকল কারণে অবৈধ ক্লিক হতে পারেঃ
  • যদি ওয়েবসাইটের মালিক নিজের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে ভুলবশত ক্লিক করে,
  • এক বা একাদিক ব্যক্তি যদি একই বিজ্ঞাপনে বারবার ক্লিক করতে থাকে,
  • ভুল স্থানে বিজ্ঞাপন প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে যদি ব্যবহারকারীদেরকে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করানো হয়,
  • কোন সফটওয়্যার বা টুলস ব্যবহার করে যদি ক্লিক করানো হয়,
  • যদি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার জন্য ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করা হয়।
এছাড়াও আরো কারণ থাকতে পারে। তবে আমার দেখায় এখানের ৩ নং পয়েন্ট এর কারণে সবচেয়ে বেশী অবৈধ ক্লিক ঘটেছে। তাই এদিকে লক্ষ্য রাখা সবচেয়ে বেশী ইম্পরট্যান্ট। যেকোনো অবৈধভাবে অ্যাডসেন্স এর ক্লিক বাড়াতে চেষ্টা করা হলে সেটা Invalid Click হতে পারে। এতে আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড অথবা বাতিল হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখা উচিৎ। গুগল জানে যে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তৃতীয় পক্ষ। যেখানে আপনার হাত নেই তবুও এটা বন্ধ করার দায়িত্ব আপনাকেই দিয়ে রেখেছে। এবং সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে আপনি তা বন্ধ করতে পারেন বলেই গুগল এখানে দায়মুক্ত।

কিভাবে অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক প্রতিরোধ করবেন

এখন যেহেতু আপনি জানেন যে অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক এর জন্য আপনাকেই দায়ী করা হবে সুতরাং কোন কারণে যদি আপনার চোখে সন্দেহজনক কিছু পরে তবে সাথে সাথেই আপনি গুগলকে জানাতে পারেন। আর নিচের উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়মিত নিরীক্ষা এবং সমাধান করার মাধ্যমে আপনি অ্যাডসেন্স অবৈধ ক্লিক প্রতিরোধ করতে পারবেন।

  1. আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর সোর্স এবং এবং ব্যবহারকারীদের গতিবিধি লক্ষ্য করুন। এর জন্য চাইলে আপনি অ্যাডসেন্স কাস্টম চ্যানেল, ইউআরএল চ্যানেল ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনি জানতে পারবেন কোন সোর্স থেকে আসা ভিজিটর আপনার অ্যাডসেন্স আয়ে কীরূপ পার্থক্য আনতে পারে। এবং একই সাথে Google Analytics ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে আরো বেশী জানতে পারবেন। একই সাথে তাদের সন্দেহজনক গতিবিধি সম্পর্কেও।
  2. অনিশ্চিত বা নিরাপদ কিনা তা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নেই এরকম থার্ডপার্টি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক এবং ট্র্যাফিক সোর্স ব্যবহার করা থেকে সচেতন থাকুন। কারণ অনেক সময় এসকল থার্ডপার্টি বিজ্ঞাপন এর কারণে এবং একই সাথে এসকল ওয়েবসাইট থেকে আসা ব্যবহারকারীদের কারণেও অবৈধ ক্লিক হতে পারে। যেমন পপ-আপ বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে গিয়ে কেউ আপনার অ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপনে ক্লিক দিয়ে বসলো।
  3. কোনভাবেই নিজের ওয়েবসাইট এর বিজ্ঞাপনে ক্লিক করা যাবে না। যদিও গুগল এই ক্লিক ফিল্টার করবে তবুও এটি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। যদি আপনার কাছে মনে হয় বিজ্ঞাপনটি আপনার কাজের এবং আপনি আসলেই বিজ্ঞাপনটিতে ক্লিক করতে চান লিংক এ যাওয়ার জন্য সেক্ষেত্রে আপনি গুগল এর অ্যাডসেন্স পাবলিশার টুলবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনি বিজ্ঞাপনে ক্লিক না করেও বিজ্ঞাপন দেখার জন্য লিংক পেয়ে যাবেন। ফলে অবৈধ ক্লিক এর সম্ভাবনা থাকবে না।
  4. ওয়েবসাইট এ অ্যাডসেন্স কোড ব্যবহার করার পর বারবার চেক করুন সঠিক অ্যাড কোড বসিয়েছেন কিনা। এবং একই সাথে নিশ্চিত হন কোড বসানোতে কোন ভুল আছে কিনা, সঠিক স্থানে কোড বসানো হয়েছে কিনা এবং সব কিছুই নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে কিনা।
  5. অ্যাডসেন্স সেটিংস থেকে authorized sites ফিচার ব্যবহার করুন। এতে আপনার ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোন ওয়েবসাইট এ আপনার অ্যাডসেন্স কোড ব্যবহার না হওয়া থেকে বাঁচতে পারবেন। মূলত অনেকসময় অনেক ওয়েবসাইট ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিতে পারে। একই সাথে আপনার ওয়েবসাইট এ থাকা অ্যাড কোডও। আর এতে ভায়োলেশন তৈরি হতে পারে।
  6. সবচেয়ে বেশী নজর দেয়া উচিৎ বিজ্ঞাপন বসানোর স্থানের দিকে। যদি আপনি এমন স্থানে অ্যাড কোড বসান যেখানে ভুলবশত বিজ্ঞাপনে ক্লিক পড়ার সম্ভাবনা থাকে তবে Invalid Click সবচেয়ে বেশী হবে। কেনোনা ভুলে ক্লিক করে ফেললে অবশ্যই ব্যবহারকারী সাথে সাথেই ব্যাক বাটনে ক্লিক করবে ফিরে আসতে। যেহেতু বিজ্ঞাপনের ওয়েবসাইটটির প্রতি তার আগ্রহ নেই সেহেতু এটাই স্বাভাবিক। অথবা সে ট্যাব বা ব্রাউজারটি বন্ধই করে দিবে। আর এটাই অবৈধ ক্লিক হিসেবে গণ্য হবে। মনে রাখা উচিৎ শুধু ক্লিক হলেই তা আপনার আয় হিসেবে ধরবে না গুগল। শুধু ক্লিকের উপর ভিত্তি করেও গুগল কোন অর্থ প্রদান করে না। সুতরাং ক্লিক বাড়ানোর চেষ্টা করাটা আপনার আয় কমার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।